ধর্ম : ভারতীয় ধর্মসমূহের উপকথা  



ধর্ম : ভারতীয় ধর্মসমূহের উপকথা







ভারতীয় ধর্ম কি ?


ভারতীয় ধর্ম বলতে ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভুত ধর্মবিশ্বাসগুলিকে বোঝায়। এই ধর্মগুলি হলো হিন্দুধর্ম , জৈনধর্ম , বৌদ্ধধর্ম ও শিখধর্ম। ইংরেজিতে অনেক সময় ভারতীয় ধর্মগুলিকে ধার্মিক রিলিজিয়ানস নামেও অভিহিত করা হয়। এই ধর্মবিশ্বাসগুলিকে প্রাচ্যদেশীয় ধর্ম বর্গের ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। 




ভারতীয় ধর্মসমূহ 




বিশ্ব সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে জানতে ঘুরে আসুন বাংলার পাঁচ মুক্ত সাহিত্যকোষ থেকে 


হিন্দু ধর্ম 


হিন্দুধর্ম  ভারতীয় উপমহাদেশের বৃহত্তম ধর্মবিশ্বাস। হিন্দু ধর্মবলম্বীগণ স্বীয় ধর্ম মতকে সনাতন ধর্ম নামেও অভিহিত করে। হিন্দু ধর্মের সাধারণ ধরণগুলির মধ্যে লৌকিক হিন্দুধর্ম ও বৈদিক হিন্দুধর্ম থেকে বৈষ্ণবধর্মের অনুরূপ ভক্তিবাদ ধারার মতো একাধিক মতবাদগুলির সমন্বয়ের এক প্রচেষ্টা লক্ষিত হয়। হিন্দুধর্ম একধিক ধর্মীয় ঐতিহ্যের সমন্বয় গঠিত। 

এই ধর্মের কোনো একক প্রতিষ্টাতা নেই। খ্রিষ্টধর্ম ও ইসলামধর্মের পরেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্মমত। হিন্দুধর্মের শাস্ত্রগ্রন্থের সংখ্যা প্রচুর। হিন্দুশাস্ত্র শ্রুতি ও স্মৃতি নামে বিভক্ত। এই গ্রন্থগুলীতে ধর্মতত্ত্ব , দর্শন ও পুরান আলোচিত হয়েছে। 







বৌদ্ধ ধর্ম 


বৌদ্ধ ধর্ম গৌতম বুদ্ধ কতৃক প্রচারিত একটি ধর্ম বিশ্বাস এবং জীবন দর্শন। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ট শতাব্দীতে গৌতম বুদ্ধের জন্ম। বুদ্ধের পরিনির্বাণের পরে ভারতীয় উপমহাদেশ সহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার হয়। বর্তমানে বৌদ্ধ ধর্ম দুটি প্রধান মতবাদে বিভক্ত। প্রধান অংশটি হচ্ছে হীনযান বা থেরবাদ দ্বিতীয়টি হল মহাযান নাম পরিচিত। 

আক্ষরিক অর্থে বুদ্ধ বলতে একজন জ্ঞানপ্রাপ্ত , জ্ঞানী , জাগরিত মানুষকে বোঝায়। উপাসনার মাধ্যমে উদ্ভাসিত অধ্যাত্বিক উপলব্ধি এবং পরম জ্ঞানকে বোধি বলা হয়। সেই অর্থে যে কোনো মানুষই বোধপ্রাপ্ত ও জাগরিত হতে পারে। সির্দ্ধাথ গৌতম এইকালের এমনই একজন বুদ্ধ। আর যে ব্যাক্তি এই বোধি জ্ঞান লাভ বা ধারণ করেন তাকে বলা হয় বোধিসত্ত্ব। 








জৈন ধর্ম 




জৈন ধর্ম প্রাচীন ভারতে প্রবর্তিত একটি ধর্মমত। বর্তমানে বিশ্বের নানা দেশে এই ধর্মাবলম্বিদের দেখা যায়। জৈন ধর্মের মূল বক্তব্য হল সকল জীবের প্রতি শান্তি ও অহিংসার পথ গ্রহণ। জৈন  ধর্মনুশীলনের মূল কথা হল দৈব চৈতন্যের অধ্যাত্বিক সোপানে স্বচেষ্টায় আত্মার উন্নতি। 


জৈনধর্মকে শ্রমণ ধর্ম বা নির্গ্রহন্থদের ধর্ম ও বলা হয়। কথিত আছে , তীর্থঙ্কর নামে চব্বিশ জন মহাজ্ঞানী কৃচ্ছসাধকের একটি ধারা পর্যায়ক্রমে জৈনধর্মকে পুনরুদ্ধার করেছিলেন। জৈনরা প্রাচীন শ্রমণ অর্থাৎ , কৃচ্ছ সাধনার ধর্মকে আজ ও বহন করে নিয়ে চলেছেন। শুধু তাই নয় , জৈন গ্রন্থগারগুলি ভারতের প্রাচীনতম গ্রন্থগারও বটে। 







শিখ ধর্ম 


শিখ ধর্ম একটি একইশ্বরবাদী ধর্ম। খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে পাঞ্জাব অঞ্চলে এই ধর্ম প্রবর্তিত হয়। এই ধর্মের মূল ভিত্তি গুরু নানক দেব ও  তার  দশজন শিখ গুরুর ধর্মউপদেশ। শিখ ধর্ম বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী। শিখ ধর্মমত ও দর্শন গুরুমত নামেও পরিচিত। 

শিখধর্মের প্রধান বক্তব্য হলো ওয়াহেগুরু অর্থাৎ সর্বব্যাপী ঈশ্বরের প্রতীক এক ওঙ্কার এর প্রতিভূ ওয়াহেগুরু তে বিশ্বাসী। এই ধর্ম ঈশ্বরেরনাম ও বাণীর নিয়মবদ্ধ ও ব্যাক্তিগত ধ্যানের মাধ্যমে মোক্ষলাভের কথা বলে। শিখেরা মনে করেন ঈশ্বরের এই ব্রহ্মাণ্ডের স্বরূপ। শিখেরা দশজন শিখ গুরুর উপদেশ ও গুরুগ্রন্থ সাহিব নামক ধর্মগ্রন্থের অনুশাসন মেনে চলেন। 






শান্ত ধর্ম 


শান্তধর্ম হিন্দুধর্মের একটি শাখাসম্প্রদায়। হিন্দু দিব্য মাতৃকা শক্তি বা দেবী পরম ও সর্বোচ্চ ঈশ্বর এই মতবাদের ভিত্তি করেই শান্তধর্মের উদ্ভব। হিন্দু ধর্মের প্রধান তিনটি বিভাগের অন্যতম শান্তধর্ম। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , অন্য দুটি বিভাগ হল বৈষ্ণবধর্ম ও।  শান্তধর্মমতে দেবী  হলেন পরব্রম্মা।

 তিনি এক এবং অদ্বিতীয়। অন্য সকল দেব দেবী তার  রূপভেদমাত্র। যদিও শান্তরা কেবলমাত্র ব্রহ্মের শক্তিস্বরূপিণী নারীমূর্তিরই পূজা করে থাকেন। এই ধর্মের ব্রহ্মের পুরুষ রূপটি হলো শিব। তবে তার স্থান শক্তির পরে এবং তার পূজা সাধারণত সহায়ক অনুষ্ঠান রূপে পালিত থাকে। 




আরো পড়ুন :










Post a Comment