ধর্ম : ইব্রাহিমীয় ধর্মসমূহের ইতিকথা 




ধর্ম : ইব্রাহিমীয় ধর্মসমূহের ইতিকথা







ধর্ম কি ?


ধর্ম হল নির্দিষ্ট আচার অনুষ্ঠান , আচরণ ও অনুশীলন , নৈতিকতা , বিশ্বাস , বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গি, গ্রন্থ , পবিত্র স্থান , ধর্মে নীতিশাস্ত্র বা সংস্থার একটি সামাজিক - সংস্কৃতিক ব্যবস্থা , যা মানবতাকে অতিপ্রাকৃত , অতীন্দ্রিয় এবং অধ্যাত্বিকতা উপাদানগুলোর সাথে সম্পর্কিত করে। 





পৃথিবীতে কয়টি ধর্ম আছে ?



পৃথিবীতে মানুষের জীবন যাপনের দিক নির্দশনা এবং সাম্য - মৈত্রীর বাণী নিয়ে যুগে যুগে বিভিন্ন ধর্মের আগমন হয়েছে। মধপ্রাচ্য এবং ভারতবর্ষ হচ্ছে ধর্মের আদিভূমি। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধর্মের নাম মানুষ রক্ত গঙ্গা বইয়ে দিয়েছে আবার এই ধর্মই মানুষকে করেছে সুসংহত , মানবতাবাদী। বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১০,০০০ স্বতন্ত্র ধর্ম রয়েছে। বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৮৪% খ্রিষ্টধর্ম , ইসলাম , হিন্দুধর্ম ও বৌদ্ধধর্ম বা কোনো না কোনো ধর্মের সাথে যুক্ত রয়েছে। 






ধর্ম শব্দের উৎপত্তি 



ধর্ম শব্দটি উৎপত্তি সংস্কৃত ' ধৃ ' হতে (অর্থ ধারণ) একজন ব্যাক্তি তার জীবনের তার যত প্রকার বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে সব মিলিয়ে হয় তার ধর্ম।  তার বিশ্বাস , তার পরস্পরাগত শিক্ষা , তার আচার ব্যবহার ইত্যাদি এই সবই তার ধর্ম। 





ইব্রাহিমীয় ধর্মসমূহের ইতিকথা




ইসলাম ধর্ম 



ইসলাম একইশ্বরবাদী ধর্ম। ' ইসলাম ' শব্দের অর্থ আত্মসমর্পণ বা বা একক স্রষ্টার নিকট নিজেকে সম্পর্পন করা। পবিত্র কুরআন দ্বারা পরিচালিত যা এমন এক কিতাব যাকে এর অনুসারীরা আল্লাহর বাণী বলে মনে করে এবং ইসলামের প্রধান নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদত্ত শিক্ষা পদ্ধতি , জীবনাদর্শও এর ভিত্তি। ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা নবী করিম (সাঃ) কে শেষ নবী হিসাবে মনে করে।  তিনি এই ধর্মের প্রবর্তক নন বরং আল্লাহর পক্ষ হতে প্রেরিত সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবী ও রাসূল। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে তিনি এই ধর্মকে পুনঃপ্রচার করেন। 




খিস্টধর্ম 


খিস্ট ধর্ম হচ্ছে একঈশ্বরবাদী ধর্ম। নাজারাথের যীশুর জীবন ও শিক্ষাকে কেন্দ্র করে এই ধর্ম বিকশিত হয়েছে। খ্রিস্টানরা মনে করে যীশুই মসীহ এবং তাকে যীশু খ্রিস্ট বলে ডাকেন। খ্রিস্ট ধর্মের শিক্ষা নতুন টেষ্টামেন্ট বা নতুন বাইবেলে গ্রথিত আছে। এই ধর্মাবলম্বীরা খ্রিস্টান নাম পরিচিত। তারা বিশ্বাস করেন যে যীশু খ্রিস্ট হচ্ছেন ঈশ্বরের পুত্র। ইসলাম ধর্মে যীশুকে এসে (আঃ) বলা হয়েছে এবং তিনি ইসলাম ধর্মের এক জন নবী। 






ইহুদি ধর্ম 



ইহুদি ধর্ম অত্যান্ত প্রাচীন একইশ্বরবাদী ধর্ম।  ধারণাগত মিল থেকে ধর্মতাত্ত্বিক গত ধারণা করেন যে , ইহুদি ধর্মের ধারাবাহিকতায় গড়ে উঠেছে  খ্রিস্ট ধর্ম  এবং ইব্রাহিমীয় ধর্ম সমূহ। এই ধর্মের মূল ধর্মগ্রন্থ হিসেবে ওল্ড টেস্টামেন্টের প্রথম পাঁচটি বইকে গণ্য করা হয় , জেনেসিস , এক্সডেস , লেভিটিকাস , নাম্বারস এবং ডিওটেরোনমি।  এই পাঁচটি বইকে একত্রে তোরাহ বলা হয়ে থাকে। মুসলমানগণ মোজেসকে মুসা (আঃ) নবী হিসেবে মানেন। এবং মুসা নবীর উপর নাজিলকৃত ধর্মগ্রন্থকে তাওরাত নামে অভিহিত করেন। 


মানব ধর্ম 

বর্তমান যুগে যারা শুধু বিজ্ঞান ও বিবর্তনকে বিশ্বাস করে তারা মানব ধর্ম পালন করে। তারা স্বাধীন। তারা আধুনিক বিজ্ঞানকে আদর্শ মনে করে। 
মানব ধর্মে বিশ্বাসীগণ নাস্তিক নামেও পরিচিত ,কারণ তারা আদিমকালের কোন ধর্মই বিশ্বাস করে না,পালন করে না। ৭৭১.৫ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে মানবধর্মে বিশ্বাসী পুরো পৃথিবীতে ২০ কোটি প্রায়। মানব ধর্মের উল্লেখ কবি 'লালন শাহ 'তার কবিতায় বলেছেন। তিনি চেয়েছেন ধর্ম,জাত ,বর্ণের কোন ভেদাভেদ না রেখে  সবাই মানব ধর্মে মনোযোগ দেই,মানবধর্ম পালনে বিশ্বাসী হই। 

দ্রুজ ধর্ম 

দ্রুজ একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম এবং সামাজিক সম্প্রদায়। দ্রুজদের আবাসভূমি সিরিয়া,লেবানন ,ইসরাইল এবং জর্ডানে। দ্রুজ ধর্মকে আলাদা ধর্ম হিসেবে স্বকৃতি দেয়নি। কারণ এই ধর্মের ভিত্তি হলো ইসলাম। দ্রুজগণ নিজেদেরকে আহলে তাওহীদ অথবা আল মুহাহিদুন বলে পরিচয় দেয়। 






মান্দাই ধর্ম 


ইব্রাহিমীয় ধর্ম সমূহের মধ্যে অন্যতম ধর্ম হচ্ছে মান্দাই ধর্ম। মান্দাই ধর্মবলম্বীরা একইশ্বরবাদী হলেও তাদের মধ্যে দৈতনীতি লক্ষ করা যায়। মূলত এ ধর্মের অনুশীলন বেশি লক্ষ করা যায় ইউফেরিটিস , টাইগ্রিস এবং সাতার আল আরবকে ঘিরে। তার বিশ্বাস করে এক অদৃশ্য ক্ষমতাশালীকে যার মধ্যে দিয়ে সৃষ্টিকর্তা এসেছে। তারা আলোকে পিত এবং অন্ধকারকে মাতা হিসেবে বিশ্বাস করে। এ ধর্মের গ্রন্থের নাম গিজা বা গিজা বারা। 




রাস্তাফারি ধর্ম 




রাস্তাফারি হচ্ছে একটি ইব্রাহিমীয় ধর্মমত যা ১৯৩০ সালে জ্যাকম্যাকাইতে উৎপত্তি লাভ করে। রাস্তাফারিরা তাদের চার্চ কতৃক তাদের প্রদত্ত উপাধি যেমন মুরব্বি , বড় সাধু ইত্যাদি নাম পরিচিত হয়। রাস্তাফারি ধর্ম অনুসারীদের রাস নামে অভিহিত করা হয়। তাদের ধর্মগ্রন্থকে  রাস্তাফারিনিজম বলে অভিহিত করে। 






আরো পড়ুন :








বিশ্ব সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে জানতে ঘুরে আসুন বাংলার পাঁচ মুক্ত সাহিত্যকোষ থেকে । 









Post a Comment