প্রশ্ন : আল - খিজির (আঃ) কি একজন ফেরেশতা , একজন রাসূল , একজন নবী বা একজন ওয়ালী (সন্ত) ছিলেন ?
উত্তর :
সকল প্রসংশার মালিক আল্লাহ
খিজির (আঃ) কে অনেক নামে সম্বধোন করা হয় যেমন আল -খাদির , খাদের , খিদব , খিজর হিসেবে প্রতিলিপি করা হয়েছে। মহান প্রজ্ঞা বা অতিনিদ্রিয় জ্ঞানের অধিকারী ঈশ্বরের একজন ধার্মিক দাস হিসেবে কুরআনে বর্ণিত কিন্তু নাম দ্বারা উল্লেখ করা হয় নি।
বিভিন্ন ইসলামী এবং অইসলামী ঐতিহ্যে খিজির (আঃ) কে একজন বার্তাবাহক , নবী বা ওলি হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে , যিনি সমুদ্র পাহারা দেন , গোপন জ্ঞান শিক্ষা দেন এবং দুর্দশাগ্রস্থদের সাহায্য করেন। তিনি বিশিষ্টভাবে ইসলামী সাধক ইবনে আরাবীর পৃষ্টপোষক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কুরআনের আয়াতের সাধারণ অর্থ থেকে প্রতীয়মান হয় যে তিনি একজন নবী ছিলেন।
শাইখ আল - শানকিতি (রহঃ) আয়াতের অর্থের ব্যাখ্যা করে তার তাফসীরে বলেছেন :
" অতঃপর তারা আমাদের একজন বান্দাকে পেল , যাকে আমি আমার পক্ষ থেকে রহমত দান করেছি এবং যাকে আমার কাছ থেকে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছি। "
[আল -কাহফ ১৮:৬৫]
কিন্তু কিছু আয়াত থেকে বোঝা যায় যে , এখানে যে রহমতের কথা বলা হয়েছে তা ছিল নবুওয়াতের রহমত এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এই জ্ঞানটি ছিল ওহীর জ্ঞান। এটা জানা যায় যে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত এবং জ্ঞান দান হচ্ছে। নবুয়াতের চেয়ে বেশি সাধারণ এবং আরো বেশি উপায়ে আসে। সাধারণ কিছু বিদ্যমান থাকা মানেই বোঝায়না যে আরো নির্দিষ্ট কিছু বিদ্যমান , যেমনটি সুপরিচিত। আল্লাহ তার বান্দা আল খিজির (আঃ) কে যে রহমত ও জ্ঞান দিয়ে নবুওয়াত ও ওহীর মাধ্যমে আশীর্বাদ করেছিলেন তা উপরোক্ত আয়াতের মধ্যে বোঝা যায়।
" এবং আমি সেগুলি আমার নিজের ইচ্ছাই করিনি " [আল - কাহফ ১৮:৮২]
অর্থাৎ , বরং আমি এগুলো আল্লাহর নির্দেশে করেছি , এবং আল্লাহর আদেশে শুধুমাত্র ওহীর মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হয়েছে , কারণ আল্লাহর নির্দেশ ও নিষেধজ্ঞাগুলি আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহীর মাধ্যমে জানার কোনো উপায় নেই , বিশেষ করে এই বিষয়ে। একটি দৃশ্যত নিরপরাধ আত্মাকে হত্যা করা এবং একটি জাহাজে একটি গর্ত করে ক্ষতি সাধন করা , কারণ মানুষের জীবন ও সম্পদের বিরুদ্ধে আগ্রাসী কাজ করা শুধুমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহীর মাধ্যমে বৈধ হতে পারে। আল্লাহ সতর্ক করার পদ্ধতিকে ওহীর মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন যেমন তিনি বলেছেন।
"হে নবী (সাঃ) বলুন : আমি তোমাদেরকে শুধুমাত্র ওহীর মাধ্যমে সতর্ক করেছি। "
[আল - আম্বিয়া ২১:৪৫]
এই আয়াতে ইন্নামা (শব্দটি এখানে "শুধু " হিসাবে অনুবাদ করা হয়েছে ) সীমাবদ্ধতা বোঝায়।
আদওয়া আল বয়ান , ৪/১৭২,১৭৩
এবং সে বলেছিলো :
এই সবথেকে আমরা জানি যে আল - খিজির ছেলেটিকে হত্যা করে জাহাজে একটি গর্ত তৈরী করেছে এবং তার কথা ,
"এবং সেগুলো আমি নিজের ইচ্ছায় করিনি "
[আল -কাহফ ১৮:৮২-অর্থের ব্যাখ্যা ]
স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে তিনি একজন নবী ছিলেন। আল - ফখর আল - রাযী , তার তাফসীরে , অনেক পন্ডিতদের কাছে তিনি একজন নবী ছিলেন বলে অভিমত দিয়েছেন। আরেকটি কারণ যা ইঙ্গিত করতে পারে যে তিনি একজন নবী ছিলেন তা হলো যে মুসা (আঃ) তার সামনে নিজেকে বিনীত করেছিলেন এবং বলেছিলেন (অর্থের ব্যাখ্যা ):
"আমি কি আপনাকে অনুসরণ করতে পারি যাতে আপনি আমাকে সেই জ্ঞান (পথনির্দেশ ও সত্য পথ ) থেকে কিছু সেখান যা আপনাকে (আল্লাহ কতৃক ) শেখানো হয়েছে ? [আল - কাহফ ১৮:৬৬]
"আল্লাহ যদি চান , আপনি আমাকে ধোর্যশীল পাবেন এবং আমি আপনার কোনো অবাধ্যতা করবো না " [আল - কাহফ ১৮:৬৯]
যদিও খিজির (আঃ) তাকে বলেছিলো ( অর্থের ব্যাখ্যা ):
"এবং যে বিষয়ে তুমি জানোনা তার ব্যাপারে তুমি কিভাবে ধৈর্য ধরবে ?"
[আল - কাহফ ১৮:৬৮]
আদওয়া আল - বয়ান , ৩/৩২৬
Post a Comment