শাজারাতুদ দুর : ক্রীতদাস থেকে ক্ষমতাবান নারী শাসক

শাজারাতুদ দুর : ক্রীতদাস থেকে ক্ষমতাবান নারী শাসক



শাজারাতুদ দুর বা শাজারুদ দুর ছিলেন মিশরের একজন শাসক। তিনি মালিকা আসমাতুদ্দিন উম্মে খলিল শাজারাতুদ দুর নামধারণ করে সিংহাসনে আরোহন করেন। তিনি ধারাবাহিক ভাবে সালিহ আইয়ুব ও ইযযুদ্দিন আইবাকের স্ত্রী ছিলেন। তিনি বাহরি মামলুক রাজবংশের প্রথম সুলতান। আইযুবের সাথে বিয়ের পূর্বে তিনি একজন ক্রীতদাসী ও আইয়ুবের উপপত্নী ছিলেন। 

রাজনীতির ময়দানে শাজারাতুদ দুর মিশরের বিরুদ্ধে পরিচালিত সপ্তম ক্রুসেডের সময় (১২৪৯ - ১২৫০ খ্রিস্টাব্দ) তার প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ১২৫০ সালের ২ মে মিশরের সুলতানা হন। যা আইয়ুবীয় রাজত্বের সমাপ্তি এবং মামলুক যুগের সূচনা করে। শাজারাতুদ দুররের বংশগত উদ্ভব সম্পর্কে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব রয়েছে। অনেক মুসলিম ইতিহাসবিদ বিশ্বাস করতেন যে তিনি বেদুইন, সার্কাসীয়, গ্রীক বা তুর্কি বংশোদ্ভূত ছিলেন। আবার কেউ কেউ বিশ্বাস করতেন যে, তিনি আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন। 

উপাধি 

কিছু উৎসে শাজারাতুদ দুররের সুলতানা উপাধি ধারণ করার ব্যাপারে পাওয়া যায়। সুলতানা শব্দইটি সুলতান শব্দের স্ত্রীবাচক। ঐতিহাসিক সূত্রে এবং শাজারাতুদ দুরের একমাত্র বিদ্যমান থাকা মুদ্রায় তাকে ''সুলতান'' হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে। 

পটভূমি 

Bohubrihi online courses


শাজারাতুদ দুর ছিলেন আর্মেনীয় বা তুর্কি বংশের। ইতিহাসে তাকে সুন্দরী, ধার্মিক ও বুদ্ধিমতী নারী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সুলতান হবার পূর্বে সালিহ আইয়ুব তাকে শাম থেকে ক্রীতদাসী হিসেবে ক্রয় করেন। শামে আইয়ুব সুলতান হওয়ার আগে এবং ১২৩৯ সালে সেখানে বন্দী হওয়ার সময় তিনি এবং মামলুক বাইবার্স  কারাকে গিয়েছিলেন। পরে যখন আস-সালিহ আইয়ুব ১২৪০ সালে সুলতান হন তখন তিনি তার সাথে মিশরে যান এবং তাদের পুত্র খলিলের জন্ম দেন যাকে মালিকুল মানসুর বলা হত। এই জন্মের কিছুকাল পরেই আইয়ুব শাজারাতুদ দুরকে বিয়ে করেন।

১২৪৯ সালের এপ্রিল সালিহ আইয়ুব সিরিয়ায় গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পরেন। তাই তিনি মিশরে ফেরার পথে দমইয়াতের কাছাকাছি আশমুম তানাহে পৌঁছান। তখন তিনি ফ্রান্সের নবম লুই কর্তৃক সাইপ্রাসে ক্রুসেডার বাহিনী একত্রিত করার ও মিশরে আক্রমণের প্রস্তুতি গ্রহণ করার সংবাদ পান। ১২৪৯ সালের জুনে ক্রুসেডাররা নীলনদের মুখে দমইয়াতের পরিত্যক্ত শহরে অবতরণ করে। 

সালিহ আইয়ুবকে একটি স্ট্রেচারে করে মানসুরাহ শহরে তার প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তিনি প্রায় ১০ বছর মিশর শাসন করার পর ২২ নভেম্বর ১২৪৯ সালে মারা যান। শাজারাতুদ দুর, আমির ফখরুদ্দিন ইবনুশ শাইখ এবং তাওয়াশি জামালুদ্দিন মুহসিনকে সুলতানের মৃত্যুর কথা জানান, কিন্তু দেশটি ক্রুসেডারদের আক্রমণের মুখে ছিল। তাই তারা তার মৃত্যু গোপন করার সিদ্ধান্ত নেন। সুলতানের কফিনবন্দী দেহটি গোপনে নৌকায় করে নীলনদের রুদাহ দ্বীপের দুর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। 

যদিও মৃত সুলতান তার মৃত্যুর পর কার উত্তরাধিকারী হবেন সে বিষয়ে কোনো সাক্ষ্য রাখেননি, ফারিসুদ্দিন আকতাইকে মৃত সুলতানের ছেলে মুয়াযযাম তুরানশাহকে ডাকার জন্য হাসানকেফে পাঠানো হয়েছিল।প্রত্যক্ষদর্শী পর্যবেক্ষক, যারা সুলতানের মৃত্যুর সময় জীবিত ছিলেন এবং মিশরে ছিলেন তারা বলেছেন যে- নথিগুলি একজন ভৃত্য দ্বারা জাল করা হয়েছিল। যে সুলতানের হাতের লেখা নকল করতে পারত। 

আমির ফখরুদ্দিন ডিক্রি জারি এবং রাজকীয় আদেশ প্রদান করতে শুরু করেন এবং উপদেষ্টাদের এই ছোট বৃত্ত জনগণ এবং অন্যান্য সরকারী কর্মকর্তাদের বোঝাতে সফল হন যে সুলতান মৃত নন, বরঞ্চ অসুস্থ। শাজারাতুদ দুর সুলতানের জন্য খাবার প্রস্তুত করে তার তাবুতে নিয়ে যেতে থাকেন। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সুলতানের মামলুকে এবং সৈন্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, অসুস্থ সুলতানের ইচ্ছায় সুলতান তার উত্তরাধিকারী তুরানশাহ এবং প্রধান সেনানায়ক আতাবেগ ফখরুদ্দিন ইউসুফের প্রতি আনুগত্যের শপথ নিতে। 

amazon




সপ্তম ক্রুসেডে বিজয়

সালিহ আইয়ুবের মৃত্যুর খবর দমইয়াতে ক্রুসেডারদের কাছে পৌঁছায় আর রাজা নবম লুইয়ের ভাই আলফোনসু, কাউন্ট অব পোইতুর নেতৃত্বে সৈন্যশক্তি আগমনের কারণে তারা কায়রোর দিকে অগ্রসর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। লুই নবমের ওপর ভাই আর্টোইসের  প্রথমের নেতৃত্ব একটি ক্রুসেডার বাহিনী আশমুমের খাল অতিক্রম করে এবং মানসুরহ থেকে ২ মাইল দূরে গিদিলায় মিশরীয় ক্যাম্পে আক্রমণ করে।

  আকস্মিক আক্রমণে আমির ফখরুদ্দিন নিহত হন এবং ক্রুসেডার বাহিনী মানসুরাহ শহরের দিকে অগ্রসর হয়। শাজারাতুদ দুর মানসুরাহ রক্ষার জন্য বাইবার্সের পরিকল্পনায় সম্মত হন। মিশরীয় সেনাবাহিনীর কৌশলে ক্রুসেডার বাহিনী শহরের ভিতরে আটকা পড়েছিল, সৈন্যদল ও শহরের জনগণ দ্বারা আর্টোইসের রবার্টকে হত্যা করা হয়েছিল এবং ক্রুসেডার বাহিনীকে ধ্বংস করা হয়েছিল। এর দ্বারা তারা কয়েক দশক ধরে দক্ষিণ ভূমধ্যসাগরে আধিপত্য বিস্তারকারী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চলেছিলেন। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন: বাইবার্স বুন্দুকদারি, ইযযুদ্দিন আইবাক এবং কালাউন আলফি।

১২৫০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মৃত সুলতানের পুত্র মুয়াযযাম তুরানশাহ মিশরে আসেন এবং সালিহিয়ায় সিংহাসনে বসেন। কারণ, তার কায়রো যাওয়ার সময় ছিল না। তার আগমনের সাথে সাথে শাজারাতুদ দুর সালিহ আইয়ুবের মৃত্যুর ঘোষণা দেন। তুরানশাহ সরাসরি মানসুরাতে চলে যান এবং ৬ এপ্রিল ১২৫০ ফারিসকুরের যুদ্ধে ক্রুসেডাররা সম্পর্ণভাবে পরাজিত হয় আর রাজা নবম লুই বন্দি হন।  

তুরান শাহের সাথে বিরোধ


Aliexpress


সপ্তম ক্রুসেডে পরাজিত হবার পর লুইস নবম বন্দি হন। আর আইয়ুবীয়রা বিজয়ী হয়। কিন্তু তুরানশাহ বনাম শাজারাতুদ দুররের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এসময়ে মামলুকরা শাজারাতুদ দুররের পক্ষ নেয়। তুরানশাহ জানতেন যে, শাজারাতুদ দুর আর তার মৃত বাবার মামলুকরা তার পাশে থাকলে তিনি পূর্ণ ক্ষমতা পাবেননা। তাই তিনি পুরাতন অফিসারদের নতুন অফিসার নিয়োগ দিতে শুরু করেন।

 এমনকি তিনি নায়েবে সুলতানকেও পরিবর্তন করেন আর হিসনে কাইফা থেকে আনীত নিজের অনুগামীকে নায়েব হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি তারপর জেরুসালেমে অবস্থান করেন এবং শাজারাতুদ দুরকে সতর্ক করে বার্তা প্রেরণ করেন আর তার মৃত পিতার সম্পত্তি ও স্বর্ণ-কড়ি তার কাছে ফেরত দিতে অনুরোধ করেন। অনুরোধটির পাশাপাশি তুরানশাহের বার্তার ভাষা শাজারাতুদ দুরকে ডিস্ট্রেস করে। 

তিনি বিষয়টি মামলুকদের কাছে তুলে ধরেন। আর তুরানশাহের ধমকি আর অকৃতজ্ঞার কারণে মামলুকরা রাগান্বিত হন। পাশাপাশি তুরানশাহ মধ্যপান করতেন। তিনি মদ্যপান অবস্থায় তার পিতার মুক্ত দাসদের গালাগাল করেন আর মামলুকদের হুমকি দেন। তুরানশাহ ফারিসকুরে ২রা মে ১২৫০ সালে বাইবার্স ও একদল মামলুকের হাতে নিহত হন। তিনিই সর্বশেষ আইয়ুবীয় সুলতান ছিলেন। 

e

প্রভাব 

একজন স্বেচ্ছাচারী দাস হিসেবে; যিনি আইয়ুবীয়দের বংশের ছিলেন না, শাজারাতুদ দুররের মিশর ও সিরিয়ার প্রথম মামলুক শাসক হওয়ার গৌরব রয়েছে। আইবাক এবং শাজারাতুদ দুর তাদের মৃত্যুর আগে দৃঢ়ভাবে মামলুক রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যা শেষ পর্যন্ত মঙ্গোলদের বিতাড়িত করেছিল, ইউরোপীয় ক্রুসেডারদের পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়িত করেছিল এবং উসমানীয়দের আগমন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে স্থায়ী ছিল।


Bohubrihi online courses



ক্ষমতায় উত্থান 

তুরানশাহকে হত্যার পর মামলুক ও আমিররা সুলতানীয় দেহলিজে সাক্ষাত করেন এবং শাজারাতুদ দুরকে সিংহাসনে বসানোর সিদ্ধান্ত নেন। পাশাপাশি ইযযুদ্দিন আইবাককে আতাবেগ  হিসেবে গ্রহণ করা হয়। শাজারাতুদ দুর কায়রোর পাহাড়ের দুর্গে থাকাকালীন এই সংবাদ পান এবং দায়িত্ব নিতে সম্মত হন। 

শাজারাতুদ দুর রাজকীয় নাম "মালিকা ইসমাতুদ্দিন উম্মে খলিল শাজারুদ্দুর" গ্রহণ করেন। পাশাপাশি আরো কিছু উপাধিও নেন, যেমন- মালিকাতুল মুসলিমিন এবং ওয়ালিদাতুল মালিকুল মানসুর আমিরুল মুমিনিন (মুমিনদের আমির ও মালিকুল মানসুর খলিলের মাতা)। তিনি তার নাম জুমার নামাজের খুতবায় জারি করেন। 

সেখানে তার নামের সাথে "উম্মুল মালিক খলিল" (মালিক খলিলের মাতা) এবং "সাহিবাতুল মালিকুস সালিহ" (মালিকুস সালিহের স্ত্রী) উপাধি যুক্ত করা হয়। তার নামে মুদ্রাও মুদ্রিত হয় আর তিনি ডিক্রি জারি করতে "ওয়ালিদাতুল খলিল" নামে স্বাক্ষর করেন। তার প্রয়াত স্বামী এবং তার মৃত পুত্রের নাম ব্যবহার করে সালতানাতের উত্তরাধিকারী হিসেবে তার রাজত্বের জন্য সম্মান ও বৈধতা অর্জনের চেষ্টা করেছিলেন।

শাজারাতুদ দুররের প্রতি রাজকীয় কর প্রেরণ করার পর আমির হুসামুদ্দিনকে রাজা নবম লুইয়ের নিকট প্রেরণ করা হয়। নবম লুই তখনও মানসুরাতে কয়েদ ছিলেন। তারপর তারা এই বিষয়ে সম্মত হন যে, আগেরবার নবম লুইয়ের উপর আরোপিত মুক্তিপণের অর্ধেক পরিশোধ করার পর এবং তার জীবনের বিনিময়ে দমইয়াত সমর্পণ করলে তাকে মুক্ত করে দেওয়া হবে। লুই দমইয়াত সমর্পণ করেন এবং ৮ মে ১২৫০-এ প্রায় ১২,০০০ মুক্ত যুদ্ধবন্দীর সাথে আক্কায় যাত্রা করেন।

মৃত্যু 

Aliexpress




১২৫৭ সালের দিকে আইবাকের সাথে তার সম্পর্ক ঝগড়া ও বিতর্কের দিকে গড়ায়। একদিকে আইবাক একজন নেতৃত্বদানকারী অভিভাবক ও নিরাপত্তাদানকারী কাউকে খুঁজছিলেন। আরেকদিকে তার স্ত্রী শাজারাতুদ দুর, একজন প্রাক্তন সুলতানা যার ইচ্ছা দৃঢ় ছিল আর একটি বহিরাগত আক্রমণের সময় দেশটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থাকা অবস্থায়ও পরিচালনা করেছিলেন। 

তিনি মিশরের মূল শাসন ক্ষমতা হাতে রাখতে চেয়েছিলেন। তিনি আইবাকের কাছ থেকে সালতানাতের বিষয়গুলো গোপন করেছিলেন। তিনি তাকে তার অন্য স্ত্রীকে অনুসন্ধান করতে বাধা দেন এবং তার অন্য স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার জন্য জোর দেন। আবার আইবাকের একজন শক্তিশালী আমিরের সাথে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন ছিল; যিনি তাকে সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া মামলুকদের বিরুদ্ধে সহায়তা করবেন। তাই তিনি ১২৫৭ সালে মসুলের আমির বদরুদ্দীন লুলুর কন্যাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।

 বদরুদ্দীন লুলু আইবাককে সতর্ক করেছিলেন যে, শাজারাতুদ দুররের সাথে দামেস্কের নাসির ইউসুফের সংযোগ রয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে শাজারাতুদ দুর নিজেকে অনিরাপদ ভাবা শুরু করেন আর তিনি যেই আইবাককে সুলতান বানিয়েছিলেন সেই তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। তাই তিনি দাসদের সাহায্যে আইবাককে গোসলের সময়ে হত্যা করেন। আইবাক সাতবছর মিশর শাসন করেছিলেন।

শাজারাতুদ দুর দাবি করেন যে আইবাক রাতে হঠাৎ মারা গিয়েছেন। কিন্তু কুতুযের নেতৃত্বে আইবাকের  মামলুকরা তাকে বিশ্বাস করেনি এবং জড়িত চাকররা নির্যাতনের কারণে স্বীকার করতে বাধ্য হয়। শাজারাতুদ দুর এবং চাকরদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং আইবাকের মামলুকরা  তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, কিন্তু সালিহিয়া মামলুকরা তাকে রক্ষা করেছিল এবং তাকে লাল টাওয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যেখানে তিনি অবস্থান করেন। মুইযযিয়া মামলুকরা আইবাকের ১৫ বছর বয়সী ছেলে মানসুর আলী দ্বারা নতুন সুলতান হিসাবে সিংহাসনে বসায়। 

Amazon


২৮শে এপ্রিল মনসুর আলী এবং তার মায়ের দাসদের দ্বারা শাজারাতুদ দুরকে অপহরণ করা হয় এবং খড়ম দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। দুর্গের বাইরে তার নগ্ন দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঐতিহাসিক ইবনে আইয়াসের মতে, শাজারাতুদ দুরকে তার পা থেকে টেনে টেনে উপর থেকে নগ্ন অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

 কেবল  তার কোমরে একটি কাপড় ছিল। সে পরিখায় দাফন করার আগে তিন দিন পড়েছিল। এমনকি, এক রাতে একটি  দল এসে তার কোমরের চারপাশের কাপড় খুলে নিয়ে যায়। কারণ এটি মুক্তাযুক্ত রেশমের ছিল এবং এতে কস্তুরির গন্ধ ছিল। আইবাকের হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া দাসদেরকে ফাঁসি দেওয়া হয়। 

শাজারাতুদ দুরকে তুলুন মসজিদের কাছাকাছি একটি মাজারে সমাহিত করা হয়েছিল। তার মাজারটি মুসলিম অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া স্থাপত্যের একটি অন্যতম উদাহরণ। ভিতরে একটি মিহরাব "জীবনের গাছ" এর একটি মোজাইক দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। বিশেষ করে এই কাজটি কনস্টান্টিনোপল থেকে আনা শিল্পীদের দ্বারা কার্যকর করা হয়েছে। তার সমাধির অভ্যন্তরের চারপাশে যে কাঠের কুফীয় শিলালিপি রয়েছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অত্যন্ত সূক্ষ্ম কারুকার্যের।


আরো পড়ুন :











Post a Comment