প্রশ্ন : সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে এমন কেউ কি ছিলেন যে জ্ঞান অন্নেষণের কারণে বিয়ে করেননি ?
উত্তর :
সকল প্রশংসার মালিক আল্লাহ।
ইসলামে বিবাহ কি ?
ইসলামে বিবাহ হল বিবাহযোগ্য দুইজন নারী ও পুরুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক প্রণয়নের বৈধ আইনি চুক্তি ও তার স্বীকারোক্তি। ইসলামে কনে তার নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী বিয়েতে মত বা অমত দিতে পারে। একটি আনুষ্ঠানিক এবং অটল বৈবাহিক চুক্তিকে ইসলামে বিবাহ বা নিকাহ বলে। যা বর ও কনের পারস্পরিক অধিকার ও কর্তব্যের সীমারেখা নির্ধারণ করে।
নবী করিম (সাঃ) বিয়েকে উৎসাহিত করেছেন , এবং লোকদেরকে বিয়ে করার নির্দেশ ও আহ্বান জানিয়েছেন।
আল বুখারী (৫০৬৩) এবং মুসলিম (১৪০১) আনাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে , নবী করিম (সাঃ ) এর একদল সাহাবা নবী করিম (সাঃ) এর স্ত্রী গণকে কি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন ? তা নবী করিম (সাঃ) ব্যাক্তিগত ভাবে বর্ণনা করেছেন।
তাদের একজন বললো : আমি নারীদের বিয়ে করবো না। আরেকজন বলল : আমি মাংস খাবো না। আরেকজন বলল : আমি বিছানায় ঘুমাবো না। তিনি (সাঃ) আল্লাহর প্রশংসা করলেন তারপর তিনি বললেন : " যারা অমুক কথা বলে তাদের কি হলো ? আমি নামাজ পড়ি এবং ঘুমাই , আমি রোজা রাখি এবং রোজা ভঙ্গ করি এবং আমি নারীদের বিয়ে করি। যে আমার সুন্নত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে আমার দলভুক্ত নয়।
ইবনে মাজাহ (১৮৪৬) বর্ণনা করেছেন যে , আয়শা (রাঃ) বলেন : আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেছেন বিবাহ সুন্নতের অংশ এবং যে আমার সুন্নত অনুসরণ করে না তার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। "
আল - আলবানী ছহিহ ইবনে মাজাহ -এ হাসান হিসেবে শ্রীনিবদ্ধ করেছেন। আমরা সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে এমন কাউকে চিনিনা যারা জ্ঞান অন্নেষণ বা প্রচারের কারণে বিয়ে থেকে বিরত ছিলেন। সাহাবীদের মধ্যে যারা করেছেন এবং কাছ থেকে দ্বীনের জ্ঞান ও উপলব্ধি শিখেছেন এবং তাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ কারী ছাত্র ছিলেন তারা সবাই বিবাহিত ছিলেন।
আমরা তাদের মধ্যে এমন কাউকে জানিনা যে বিয়ে থেকে বিরত ছিল বা যারা তার ছাত্রদের কাউকে শিখতে ও অধ্যায়ন করার জন্য বা অন্য কোনো উদ্যেশ্য স্বাধীন হওয়ার জন্য তা করতে বলেছিলেন।
আত - তিরমিযী (৩৭৯০) বর্ণনা করেছেন যে আনাস ইবনে মালিক বলেছেন : আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেছেন : আমার উম্মতের প্রতি আমার উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দয়ালু হলেন আবু - বকর ' আল্লাহর হুকুম মেনে চলার ব্যাপারে তাদের মধ্যে সবচেয়ে কঠোর হলেন উমর ;
বিনয়ের মধ্যে সবচেয়ে আন্তরিক হলেন উসমান ; হালাল এবং হারাম সম্পর্কে তাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী হলেন মুয়ায ইবনে জাবাল ; উত্তরিধাকারের অংশ সম্পর্কে সবচেয়ে জ্ঞানী হলেন জায়েদ ইবনে সাবিত ; কুরআন তেলোয়াত সম্পর্কে তাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী হলেন উবাই ইবনে কাব। প্রত্যেক জাতিরই একজন আমানতদার রয়েছে এবং এই উম্মতের আমানতদার হলেন আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ। "
আল - আলবানী সহীহ আত তিরমিজিতে সহীহ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ
যে ব্যাক্তি জ্ঞান অন্নেষণ করবে সে জ্ঞানের ওই অংশটি যা সে মানুষকে বিয়ে করার জন্য উৎসাহিত করে এবং আহ্বান জানায়।
যে ব্যাক্তি জ্ঞান অর্জনকে বিবাহের সাথে একত্রিত করেছে সে দুটি ভালো জিনিসকে একত্রিত করেছে এবং ইসলামের নেতাদের, সাহাবা ও তাবিয়ানদের উদহারণ অনুসরণ করেছে , তারা সত্য পথ অনুসরণ করেছেন।
Post a Comment