বিশ্বখ্যাত গিনেস বুকের জন্ম যেভাবে
এই পর্যন্ত পুরো পৃথিবীজুরে যেসব বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে, সেগুলো খোজার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বই 'গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস।কোনো ব্যাক্তি যদি বিশেষ ক্ষেত্রে পূর্বের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়তে চান, তাহলে তাকে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কৃতিপক্ষের কাছ থেকে স্বীকার করে নিতে হবে।অর্থাৎ এই বইটি বিশ্বরেকর্ডের স্বীকৃতির এক মানদন্ড।
মূলত 'গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড 'একটি , যে বই পৃথিবীর অসংখ্য বিশ্বরেকর্ড লিপিবদ্ধ রয়েছে। ইন্টারনেটের এই যুগে গিনেস বুক অফ ওয়াল্ড রেকর্ডস কৃতিপক্ষের একটি আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে নিয়মিত হালনাগাদকৃত বিশ্ব রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়।প্রথমত বইটি শুধু প্রকাশিত হতো ইংল্যান্ড। পরবর্তীতে অভাবনীয় চাহিদা হওয়ায় পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাষায় বইটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবছর গিনেস ওয়াল্ড রেকর্ডস কতৃপক্ষ পুরো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, পূর্বের রেকর্ড ভেঙে সম্ভব্য নতুন বিশ্ব রেকর্ড গরা ব্যাক্তিদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার ডাক পেয়ে থাকেন।
গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এর যাত্রা শুরু হয় , ১৯৫০ সালের দিকে আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে এক বিয়ার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল 'গিনেস',জার নির্বাহী পরিচালক ছিলেন স্যার হিউ বিভার।তিনি অবসর যাপনের জন্য বন্ধুদের সাথে গিয়েছিলেন ওয়েক্সল্যান্ড কাউন্টিতে। যেখানে পাখি শিকারের আয়োজন করা হয়েছিল। বন্ধুদের সাথে স্যার বিভার বন্দুক কাধে নিয়ে পাখি শিকার করছিলেন।
কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। পাখিগুলো বন্দুকের গুলি বের হওয়ার সাথে সাথে উড়ে যাচ্ছিল,স্যার বিভার লক্ষ্যে গুলি রাখতে চাচ্ছিল না। হঠাৎ তার মনে হল, যে পাখি গুলো শিকারের চেষ্টা করছেন,সেগুলো খুব দ্রুত গতিতে উড়ছে হতে পারে সেগুলো ইউরোপের সবচেয়ে দ্রুতগামী পাখি। তিনি আগেও পাখি শিকার করেছেন কিন্তু কিন্তু এবারের পাখির গতি অন্য পাখির চেয়ে অনেক বেশি।
স্যার বিভার এমন এক বইয়ের প্রতিযোগিতা অনুভব করলেন, যাতে পৃথিবীর সমস্ত বিশ্বরেকর্ড লিপিবদ্ধ থাকবে। বইটিতে যে সব রেকর্ড লিপিবদ্ধ করা ছিল, সে সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। ব্রিটেনের মানুষ আগ্রহভরে বিচিত্র সব বিশ্বরেকর্ড সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে। তারা আগ্রহভরে সেসব পাট করতো। সুধু তাই না এই ভয়ে নিজের নাম তোলার জন্য নিজে থেকে বিশ্ব রেকর্ড করার চেষ্টা করেছিলেন।
গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড সিনিয়র প্রেসিডেন্ট পিটার হারপারের ভাষায় বইটি যখন 1955 সালে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়, তখন এর নাম ছিল গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বুক। বইটি প্রকাশিত হিসেবে স্যার বিভার তো দারুন মর্যাদা লাভ করেছিলেন, বইটির প্রথম সংস্কারের লেখক ভ্রাতৃদ্বয় নসির ও রস ২জনে ইংল্যান্ড ছাড়িয়ে বাইরে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
১৯৭২ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তারা বিখ্যাত ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি-র একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন। এই অনুষ্ঠানে দর্শকরা বিভিন্ন রেকর্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করতেন, তারা নিজেদের স্মৃতি হাতরিয়ে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করতেন। ২০০১ সালে যখন রস ম্যাকহুইথার মারা যান তখন এটি বন্ধ হয়ে যায় ।
স্যার হিউ বিভার ও তার বন্ধুদের বাদানুবাদ এই বই এর জন্ম, সেই বই আজ পৃথিবী জুড়ে বেশি বিক্রিত বই গুলোর একটি। প্রতিটি সংস্করণে হালনাগাদকৃত তথ্য যোগ হবার শুরু থেকেই এই বইয়ের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।
৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷ THANK YOU৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷
Post a Comment