রোজার ৭ টি উপকারিতা 


চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রমাণিত রোজার ৭টি উপকারিতা | 7 benefits of rosary proven in medical science



আমরা মুসলিমরা রোজা ও রোজার ফজিলত সম্পর্কে অবগত। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি হলো রোজা বা সিয়াম। আমরা হাজার হাজার বছর ধরে রোজা রেখে আসছি , রোজা রাখা কতটুকু ভালো বা খারাপ তা চিকিৎসা বিজ্ঞানে জানা ছিল না।  তবে গত ২০-৩০ বছরে রোজা নিয়ে গবেষণা অনেক এগিয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে কিছু আশ্চার্যজনক উপকারিতার প্রমান পাওয়া গেছে। আজ আমরা রোজা রাখার গুরুত্বপূর্ণ ৭ টি উপকারিতা সম্পর্কে এবং কিভাবে রোজা রাখলে উপকারিতা পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করবো। 





০১. অটোফেজির মাধ্যমে তারুণ্য ধরে রাখার সম্ভাবনা 





রোজার উপকারিতা আমরা জানতে পেরেছি গত কয়েক দশকে জাপানের একজন বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কারও পেয়েছেন রোজার উপর গবেষণা করে। আমাদের সারা শরীল অসংখ কোষ দ্বারা গঠিত।  এই কোষ গুলো এক একটা ছোট কারখানার মতো যেখানে সারা সময় কাজ চলছে এবং কিছু আবর্জনা তৈরি হচ্ছে কিছু যন্ত্রপাতি ভেঙে যাচ্ছে আবার সেই সাথে কিছু নতুন করে গঠিত হচ্ছে। যে কোষ গুলা নষ্ট হচ্ছে সেগুলা আবার পুনরায় ঠিক হওয়াটা নিজেই করছে অটোফিজারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। অকার্যকর কোষ গুলা আবার ব্যবহার করার যোগ্য করে তোলে।




 এই প্রক্রিয়া শরীল সতেজ এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়া ঠিক ভাবে না হলে বিভিন্ন প্রকার সমস্যা দেখা দেয় যেমন ব্রেইনের রোগ অলসাইমার এই রোগ টি হলে মানুষ অল্পতেই সবকিসু  ভুলে যেতে থাকে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। আমরা যখন সারাক্ষণ খাওয়ার মধ্যে থাকি এই অটোফেজি প্রক্রিয়া দমে থাকে অন্য দিকে রোজা রাখলে অটোফেজি প্রক্রিয়া বেড়ে যায়। এইটা আশ্চর্জনক মনে হতে পারে কারণ খাবার না খেলে শরীলের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে রোজা অবস্থায় শরীলের কোষ গুলোর ঠিক হওয়ার অবস্থা বেড়ে যায়। রোজা ছাড়াও অটোফ্যাজি প্রক্রিয়া বাড়ানোর আরো উপায় আছে যেমন ব্যায়াম। কিন্তু অটোফেজি প্রক্রিয়া বাড়ানোর জন্য ঘাম ঝরানোর ব্যায়াম এর প্রয়োজন। যারা একদম ব্যায়াম করেননা তারা রোজার মাসে অল্প অল্প করে ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। 








০২. মেটাবলিক সুইচ করে চর্বি কমিয়ে ফেলা 







আমাদের শরীল চালানোর জন্য যেমন জ্বালানির প্রয়োজন হয় , শরীল সেটা খাবার থেকে বা এক প্রকার গ্লাইকোজেন বা চিনি থেকে নিয়ে থাকে।  আমরা যখন রোজা রাখি সাধারণত এই ফুয়েল বা জ্বালিনী ১০-১২ ঘন্টায় শেষ হয়ে আসে।  তখন আমাদের শরীল চালানোর জন্য জমানো চর্বিতে হাত দিতে হয় এইটাকেই বলে মেটাবলিক সুইচ , অর্থাৎ চিনি থেকে সুইচ করে চর্বিতে আসা। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে এই সুইচের ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের বেশ কয়েকটি উপকার হওয়ার সম্ভবনা আছে।





 আমাদের হার্ট ভালো রাখা, পেটের চর্বি কমা , ব্লাড পেশার কমা সহ বেশ কিছু উপকার হয়। তবে রোজা ভেঙ্গাই আমরা কিছু কাজ করি যা হার্টের জন্য ক্ষতিকর , যেমন বাজার থেকে কিনে আনা ভাজা পোড়া খাওয়া এগুলোতে ট্রান্সপ্যাট থাকার সম্ভবনা আছে যা শরিলের জন্য খুব ক্ষতিকর। ২০২০ সালের একটা গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকার রেস্তোরায় ব্যাবহারিত ডালডাই অতি মাত্রায় ট্রান্সপ্যাট আছে। এই ট্রান্সপ্যাট হৃদ রোগের ঝুঁকি বাড়ায় এবং হার্ট এট্যাকের সম্ভাবনা অতি মাত্রায় বেড়ে যায়। তাই ভাজা পোড়া ,ফাস্ট ফুড এই গুলা এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করবেন। 







০৩. পেটের স্বাস্থ ভালো হওয়া 




আমাদের নারী ভুঁড়িতে অনেক অনেক জীবাণুর বসবাস যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ সহ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। না খেয়ে থাকলে থাকল আমাদের শরীলে অনেক উপকারী জীবাণুর সংখ্যা বাড়ে অর্থাৎ রোজা রাখলে এখানে উপকারিতা আছে। 






০৪. ওজন কমা 





বাংলাদেশ সহ আরো ৩৫ টা দেশে গবেষণা করে দেখা গেছে রোজা রাখলে গড়ে ১ থেকে ২ কেজি ওজন কমে। 



০৫. রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ 




রক্তে সুগারের মাত্রা থেকে বোঝাযায় পরিবর্তে ডায়বেটিস হওয়ার ঝুঁকি কেমন। নিদিষ্ট মাত্রার বেশি রক্তে সুগার থাকলে ডায়বেটিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এক্ষেত্রে ও রোজা রাখলে উপকার পাওয়া যায়। তুরস্ক , ইরান , মিসর সহ আর ও অনেক দেশ গবেষণা করে দেখেছে রোজা রাখলে নারী পুরুষ সহ সবার শরীলে সুগারের মাত্রা কমে। আরো একটি গবেষণায় ইন্দ্রোনেসিয়ার গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছে রোজা রাখলে যাদের ডায়বেটিস আছে তাদের ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে যারা ডায়বেটিসের রোগী ওষুধ খাচ্ছেন তারা রোজার মধ্যে কিভাবে ওষুধ খাবেন তারা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। রক্তে আরো সুগার কিভাবে বাড়ানো যায় যারা রিফাইন্ড কার্বোহাইট্রেড খান অর্থাৎ সাদা চালের ভাত , সাদা আটার রুটি এইটা পাল্টিয়ে গমের আটার রুটি খেতে পারেন। 







০৬. রক্তে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ 






আমাদের রক্তে এক প্রকার চর্বি থাকে তাকে বলে কলোস্ট্রল। রক্তে অনেক বেশি কোলেস্টরল থাকলে নারী সরু হয়ে যায় যার ফলে হার্ট এট্যাকের ঝুঁকি থাকে। রমজানের রোজা রক্তে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। আরব আমিরাত , বাহরাইন সহ সারা বিশ্বে ৯১ টি গবেষণায় পাওয়া গেসে রোজা রাখলে রক্তে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রনে আসে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ও তিনটা গবেষণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।  বাদাম , মিষ্টিকুমড়ার বীজ , কৈ মাছ , ইলিস , অলিভঅলই দিয়া রান্না করা খাবার খেলে রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এ আসে। 





০৭. ব্লড পেসার নিয়ন্ত্রণ 




২০১৯ সালে লন্ডনে একটা গবেষণায় হয় গবেষণার নাম লন্ডন রামাদান স্টাডি  রমজানের আগে ও পরে মেপে দেখা হয় ব্লড পেসারে কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না। ওই গবেষণায় দেখা যায় ব্লড পেসারের উপরের মাত্রা কমেছে ৭ মি লি মার্কারি আর দ্বিতীয় সংখ্যা কমেছে ৩ মি লি মার্কারি। ভারত , পাকিস্তান ও কাতারের গবেষণায় দেখা গেছে রমজানে ওজন না কমলেও ব্লড পেসার নিয়ন্ত্রণে আসে। সর্বশেষ সেহেরি ও ইফতারিতে বেশি করে ফল মূল খেলে ব্লড পেসার নিয়ন্ত্রণে আসে। 

You have to wait 60 seconds.







Post a Comment