অ্যালার্জি থেকে মুক্তির কার্যকর উপায়  



এলার্জির জনিত যে সকল বিষয় গুলো আলোচনা করা হবে তা হলো : 

১. এলার্জি কিভাবে হয় 
২. এলার্জি থেকে মুক্তির কার্যকরী উপায় 
৩. এলার্জির ঔষধ 
৪. এলার্জির ঘরোয়া চিকিৎসা 
৫. এলার্জির যে ওষুধ নিজে নিজে খেলে ক্ষতি হতে পারে 
৬. এলার্জির টিকা 
৭. প্রাণঘাতী এলার্জির লক্ষণ 

                                                              এলার্জি কিভাবে হয়  


রাতে যেমন মহল্লায় পাহারাদার টহল দিতে থাকে ঠিক তেমনি আমাদের শরীরে অনেক পাহারাদার টহল দিয়ে থাকে যাতে আমাদের শরীরে জীবাণু বাসা না বাধে পারে। 
আমরা প্রতিদিন অপরিষ্কার কত কিছু খেয়ে থাকি আবার বাতাসের সাথেও অনেক জীবাণু থাকে যেগুলো নিঃশেষের সাথে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, তাও আমরা অসুস্থ হয় না এই পাহারাদারের জন্য। এই ক্ষতিকর  ধরাও পাকড়াই করে একদম নিস্চিহ্ন করে দে আমরা টেরও পাই না। এটাই হলো আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ বেবস্থা। তবে এটা নিখুঁত ভাবে কাজ করে নঃ মাঝে মাঝে ভুলও করে বসে তখনি দেখা দে এলার্জি। 

যেমন ধরেন আপনি বৃষ্টির দিনে গরম গরম খিচুড়ি, বেগুন ভাজি, আর মোচ মোচে ইলিশ ভাজি খাবেন। কিন্তু খাওয়ার কিচ্ছুক্ষন পরেই দেখলেন আপনার শরীরে লাল লাল চাকা উঠতে শুরু হয়েছে এবং প্রচুর চুলকানি শুরু হয়েছে। তখনি খাওয়ার বারোটা বেজে গেলো আপনার। তাহলে এখানে ঘটনাটি কি দাঁড়ালো ? আপনার শরীরে যে পাহারাদার গুলো আছে যেগুলো প্রতিদিন আপনাকে শত্রু থেকে বাঁচায় তারা খাবারের মধ্যে যে কোনো একটা উপকরণকে ক্ষতিকর মনে করেছে। যেমন ধরলাম বেগুন কে ক্ষতিকর মনে করেছে। তাই বেগুনের সাথে মারামারি শুরু করে দিয়েছে। শরীরের ভেতরে মারামারি শুরু করে দিয়েছে আর বাইরে আপনি দেখতে পাচ্ছেন গোল লাল চাকা চাকা আর অনুভব করছেন চুলকানির। অন্য তরকারিতে সমস্যা না হলেও বেগুনে হয়েছে তাই, সহজ কোথায় এটাই হলো এলার্জি। 

আপনার শরীরের জন্য ইটা ক্ষতিকর না কিন্তু আপনার শরীরের ওই পাহারাদার গুলু এটাকে শত্রু হিসেবে চিনে রেখেছে।টহল দিয়ার সময় দেখে নেয় আর আপনি  মহা যন্ত্রনায়। সাধারণত ইটা ভয়ের কিছু না আপনা আপনি চোলে যায়। আবার অনেক রুগীকে এই এলার্জি অনেক কষ্টে রাখে। অল্প কিছু ক্ষেত্রে এলার্জি প্রাণঘার্তি হতে পারে। এটা জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ (সাধারণ এলার্জি ও প্রাণঘার্তি এলার্জি) । 



                                                  এলার্জি থেকে বাঁচার উপায় কি ? 

এলার্জির চিকিৎসা মোটা দাগের দুই ধরণের। 

১. প্রথম ও সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো এলার্জি না হতে দিয়া। আপনার শরীরকে শত্রু মনে করে তাকে আপনার কাছে ঘেঁষতে না দিয়া।

২. দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো যখন এলার্জি দেখা দেয় সে অসুস্থি গুলো কমানোর জন্য চিকিৎসা। 


প্রথমতঃ- যে জিনিসে আপনার এলার্জি সেগুলো থেকে দূরে থাকা। যে জিনিস গুলো বার বার খেলে আপনার এরোকোম চুলকানি বা লাল গোল গোল চাকা হয়ে যায় সেগুলো থেকে দূরে থাকা। আপনাকে বুজতে হবে যে কোন জিনিস গুলো খেলে আপনার এরকম হয় যেমন বেগুন খেলে হতে পারে। তাই এগুলো আপনার কাছে আস্তে দিবেন না তাহলে আপনার শরীরের পাহারাদার গুলো অযথা মারামারি করার  কাউকে পাবেন না আর আপনারও কোনো যন্ত্রনা হবে না। খাবারে এলার্জি হলে সেগুলো খুঁজে বের করা সহজ কিন্তু কিছু জিনিস আছে যেগুলো খাবারে মতো খুঁজে বের করা এতো সহজ না। 

আপনি যখন পর্যবেক্ষণ করবেন তখন যাতে বুজতে পারেন যে কোন কোন জিনিসের জন্য আপনার সমস্যা হচ্ছে তার একটি তালিকা হলো :- 

১. ডাস্ট মাইট : এগুলো হলো ছোট ছোট পোকা যা লকালি কক্ষে দেখা যায় না মাওসিরপস্কোপের দিয়ে দেখলে দেখা যায় এই পাকা গুলো। অপমাদে চামড়া থেকে যে মৃত কোষ গুলো ঝরে পরে ের সেগুলো খেয়ে বেঁচে থাকে। আমাদের শরীর থেকে অল্প অল্প মৃত কোষ ঝরে পড়ছে বিছানা, কার্পেটে, স্প্ফায় আর এসব জায়গায় বাসা বাঁধছে কোটি কোটি ডাস্ট মাইট পোকা। এই ডাস্ট মাইট পোকার জন্য আপনার এলার্জি হতে পারে এটা সাধারণ একটা কারণ। খালি চোখে দেখা না যাওয়ার কারণে একেত ধরাও যায় না। তাই বিছানার চাদর, লেপের কাভার, কাঁথা ইত্যাদি সকল জিনিজ প্রতি সপ্তাহে একবার করে গরম পানি দিয়ে ধুতে হবে। আর যেগুলো প্রতিনিয়ত ধুয়া যায় না যেমন কার্পেট এসকল জিমিস কম বেবহার করবেন। আর যে সকল জিনিস ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করা যায় যেগুলো ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করবেন যাতে ধুলো না ছড়ায় এবং যেসকল জায়গা আপনি বেশি সময় কাটান সেই স্থান গুলো বেশি পরিষ্কার রাখা আর পরিষ্কার করার সময় মুখে অবসসই মাস্ক পরে নিবেন। 


২. ছত্রাক :- বাসা সেঁতসেঁতে থাকলে ছত্রাক হতে পারে। ছত্রাক থেকে ছোট ছোট কণা বের হয় সেটা থেকে আপনার এলার্জি হতে পারে। ঘরের ভেতরে ছত্রাক হলে তা সরিয়ে ফেলবেন আর ঘরের ভেতরে বাতাস এল ঢুকার বেবস্তা করে দিবেন। আবার ঘরের ভেতরে ভেজা কাপড় শুকাতে দিবেন নাহ আর ঘরে গাছ থাকলে সরিয়ে ফেলবেন। 


৩. পরাগরেণু :- ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বাতাসে ভেসে বেড়ানো পরাগরেণু ধরণ বদলায় সংখ্যা বাড়ে কমে। আর তার সাথেও আপনার এলার্জিও বাড়তে কমতে পারে। বছরের একটা সময় দেখা যায় আপনার চোখ নাক চুলকায় আবার চোখ দিয়ে পানি পরে নাক দিয়ে পানি পরে আবার কোক লাল হয়ে যায় নাক বন্দ হয় থাকে এসব হলে পরাগরেণু আপনার শত্রু হতে পারে। 

 আপনি খিয়াল রাখবেন বছরের কোন সময়টিতে আপনার এরকম হয় সেই সময় আপনি বেশির ভাগ সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করুন আর বাইরে গেলেও ঘরে এসে গোসল দিয়ে জামা কাপড় ধুয়ে ঘরেই শুকাতে দিন। কিন্তু খিয়াল রাখবেন ভেজা কাপড় শুকানোর সময় ঘরে যেন আবার ছত্রাক না হয়। 


৪. গরম বা ঘাম :- ঘামে যে উপাদান গুলো আছে সেগুলোর জন্য আপনার শরীরে পতিকক্রিয়ায় ঘটতে পারে। জেম্প্ন আপনি অনেক খাটা খাটনি করলেন, ব্যায়াম করলেন তখন ঘামের জন্য আপনার শরীরে চুলকানি হতে পারে গোল চাকা হতে পারে এমন তা হলে যতটা সম্ভব রোদে না যাওয়া , বাতাস আছে এমন জায়গায় থাকা। আর পাতলা ঢিলা ঢালা জামা পড়বেন যাতে গা গরম না হয়। 


৫. ঠান্ডা :- গরমের মতো অনেকের ঠান্ডাতেও অনেকের এলার্জি দেখা দিতে পারে আবার বৃষ্টিতে ভেজা পুকুরে গোসল দিয়া ইত্যাদি। তাছাড়াও হতে পারে পশু পাখির লোম যেগুলো বাতাসে ভেসে বেড়ায় যা কক্ষে দেখা যায় না। পথে ঘাটের ধুলা বালি বা পোকার কামড় নির্দিষ্ট কোনো আংটি , গয়না বা ঘড়িতে থাকতে পারে। আবার নির্দিষ্ট কেমিক্যাল যেমন সাবান, সেম্পু, পারফিউম, ইত্যাদি জিনিসেও থাকতে পারে। নির্দিষ্ট কাপড় ওষুধ আবার খাবারেও থাকতে পারে যেমন চিংড়ি,বাদাম,বেগুন যেটা আগেই বলা হয়েছে। আবার ছোট বাচ্চাদের ওষুধে দুধে আবার ধরুন আপনার ঘাস খাওয়া গরুর মাংসে এলাটগি নেই কিন্তু হিব্রূড গরুর মাংসে আপনার এলার্জি হতে পারে একেক জনের একেক জিনিসের  উপর এলার্জি হতে পারে। বুঝতেই পারছেন লিস্টটা অনেক লম্বা। 

এখন আপনি ভালো বুজতে পারবেন  জন্য আপনার এলার্জি হচ্ছে কারণ আপনার শরীরে আপনি নিজেই গোয়েন্দাগিরি  অপি ভালো বুজতে পারবেন। ইটা খুঁজে বের করতে পারলে আমার নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সফজ হয়। 



                                               এখন আসি দ্বিতীয় উপায়ে 


এলার্জি হয়ে গেছে এখন আপনি কি করবেন

এলার্জি নিয়ন্ত্রণের প্রধান ঔষধ হলো আন্টি-হিস্টামিন। প্রথমেই বলেছি আপনার এলার্জির  রোগ প্রতিরোধ যখন মারামারি করছে এটার প্রীতিরোধ একটা বোরো অস্ত্র হলো হিস্টামিন। যেটা এতো গোলমাল পাকায় আর এই হিস্টামিন রুখতে দরকার আন্টি-হিস্টামিন। এ জাতীয় অনেক গুলো ওষুধ আছে যেগুলো এলার্জির যাবতীয় অসুস্থি কমাতে সাহায্য করে। যদি আগে থেকে জানা থাকে এলার্জি হতে পারে বলে আগে থেকে খেয়ে নিলে এলার্জি হওয়া থেকে রুখে দিতে পারে। ইটা করবেন আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। 


আর চুলকানি কমাতে জায়গাটিতে ঠান্ডা সেক দিতে পারেন। তোয়ালেতে বরফ নিয়ে সেক দিতে পারেন আবার চুলকানি কমাতে ( কেলামাইন লোশন, ১% মেন্থল ক্রিম ) আর নাক বন্দ থাকলে সেটার জন্যও অন্বক ঔষধ আচে কোক চুলকালে সেটার আছে তবে ইটা ব্যবহারের আগে আপনার চিকিৎসিকের পরামর্শ নিবেন। 

এলার্জি সমস্যা সমাধানের আরেকটি গুরুত্ব পূর্ণ জিনিস হলো মানুসিক চাপ। মানুসিক চেইপ থাকলে এলার্জি আরো খারাপ হতে পারে। তাই যারা মানুসিক কেপ আছেন দেখেন কিভাবে মানুসিক প্রশান্তি আনা যায়। নিয়মিত ব্যায়াম, নিস্বাসের ব্যায়াম এর মাদ্ধমে চেষ্টা করতে পারেন। 



বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভিডিওতে অনেক ঔষধের কথা বলা থাকে যেগুলা অনেক শক্তিশালী ঔষধ ভুলেও এগুলো খাবেন না এতে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দমিয়ে দেয় । এই ঔষধ খেলে আপনার শরীরের ক্ষতি হতে পারে, তাই  চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করবেন। 


 কোরোনার সময় অনেক মানুষ এই ব্ল্যাকফাঙ্গাস এর মতো অনেক শক্তিশালী ওষুধ সেবনের কারণে অনেকের অন্ধ হয়ে গেছে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের এই সমস্যা গুলো দেখা দিয়েছে। যাদের শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ তাদের শরীরে এই ঔষধ তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না। 



                                 এলার্জির পরবর্তী চিকিৎসা হচ্ছে ইমিউনোথেরাপি  



অনেকে ইটা এলার্জি ভ্যাকসিন বলে। যে জিনিসে আপনার এলার্জি সেটা অল্প অল্প করে ইঞ্জেকশন নিতে থাকতে হয় কয়েক বছর ধরে। 

মোট কথা হচ্ছে এলার্জির কয়েক ধাপের কার্যকরী চিকিৎসা আছে। একদম সেরে না গেলেও এলার্জিকে অনেক নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তাই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন প্রয়োজনে এলার্জি বিশেষজ্ঞর সরণাপন্ন হবেন। 











শেষ করার আগে প্রাণঘ্রাতি এলার্জির লক্ষণ গুলো জেনে রাখুন। এগুলো খুব দ্রুত শুরু হয় আর খুব তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যেতে থাকে। 

১. শ্বাসকষ্ট 
২. শ্বাস নিয়ার সময় সো সো শব্দ হওয়া 
৩. বুক ধড়ফড় করা 
৪. মাথা ঘুরানো 
৫. মনে হয় অজ্ঞেন হয়ে পড়ছে বা অজ্ঞেন হয়ে পড়া 
৬. গায়ে ঘাম আসা, কনফিউশন, গাল, চোখ, ঠোট ফুলে যাওয়া সাথে গায়ে চাকা হওয়া বমি ভাব বা বমি হওয়া ইত্যাদি। 

এমন লক্ষণ দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রুগীকে হসপিটালে নিয়ে যান, রুগী ভালো অনুভব করলেও হসপিটালে নিবেন। আগেই বলেছি এটা প্রাণঘ্রাতি হতে পারে সময় মতো একটা ইংজেকশন দিলে রুগীত জীবন বেঁচে যেতে পারে। 

You have to wait 60 seconds.
















 















  































Post a Comment